পোস্টগুলি

খাঁচায় বন্দী সময়ের বোকা বাক্স, ভগ্ন ঘন্টার কাটা !

ছবি
প্রথম কয়েকটা দিন ঘণ্টার হিসাব করতাম। সকালে ঘুম থেকে জেগে উঠার পর কোনো কোলাহল শুনতে পেতাম না। ঘড়ির কাটায় টিক - টিক করে দিন গড়িয়ে থমথমে দুপুর আসে আর গোধূলি শেষে ঝুপ করে নেমে আসে অন্ধকার , ঘোর কালো। আমরা কেন যে সেকেন্ড মিনিট আর ঘন্টার কাটার টিকটিক শব্দের মধ্যে নিজেদের জীবনকে বন্দী করেছিলাম ! এত বড় ক্ষতি করলাম এভাবে নিজেদের ! এসব কথা ভেবে ঘন্টার হিসেবটা ভুলে গেলাম। কি দরকার সময়ের ফ্রেমের মধ্যে আটকে থাকা। আটকে থাকার কথাটা যখন আসলো তখন খোলাখুলিভাবে বলাই ভালো। পৃথিবীর বুক চিরে বেঁচে থাকার উৎস পেয়েও শান্তি পেলাম না , মাটি থেকে তৈরি মানুষ হয়ে আমরা মাটি পুড়িয়ে বড় বড় অট্টালিকা গড়ার প্রতিযোগিতা শুরু করলাম। একে অপরকে হত্যা করার জন্য তৈরি করলাম ধ্বংসাত্মক মারণাস্ত্র। পৃথিবীর শ্বাসরোধ করে করে গাছগুলো কেটে নেয়ার মহোৎসবের আয়োজন করলাম আর পোড়ামাটির শহরটাকে সাজাতে লাগলাম বর্ণিল সাজে। এ যেন নিজেরাই নিজেদের জন্য জেলখানা তৈরীর হুড়োহুড়ি। বুক চিরে মাটি উঠি...

রূপ; বহুরূপ !

ছবি
তীব্র শীতল গভীর অন্ধকার মঞ্চে সূর্যোদয় ঘটছে। মৃদু লাল আভার স্নিগ্ধতা ফোটায় ফোটায় আলোকিত করে তুলছে মঞ্চের একাংশ। আর সেই আলোতে স্বল্প সংখ্যক চরিত্রের ভিড়ে দেখতে পেলাম হাজারও রূপ ! গহীনের অতল গহব্বর থেকে হাচড়ে পাচড়ে জেগে উঠছে এক এক করে । কিছুক্ষণের মধ্যে কলাহল শুরু হলো। এতক্ষণে মঞ্চ সম্পূর্ণ আলোকিত তবে এখানেও আলোর সাথে ছায়া রূপের খেলা চলতে দেখা যায় ! যদিও মঞ্চের প্রতিটি চরিত্রই মূল চরিত্র এবং প্রতিটি চরিত্রেরই গুরুত্ব স্বস্থানে সমান। আলোর প্রতিফলন চোখে পড়ার পর ক্রমেই রূপে রূপে দৃষ্টি বিনিময়, সংলাপ এবং ভাবের আদান প্রদান শুরু হলো। মঞ্চে এখন নানা দৃশ্যপটের সূত্রপাত ঘটছে। কিছুক্ষণ অন্তঃ অন্তঃ প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন, থমথমে পরিবেশে রূপান্তর এবং পুনরায় বাতাসের ভেলায় কলরব ভেসে এসে গুড়িয়ে দিচ্ছে সবকিছু - মঞ্চে ঋতু পরিবর্তনের থেকেও দ্রুত চরিত্রের রূপ পরিবর্তন হচ্ছে। এক একটি চরিত্রে অনির্দিষ্ট রূপ বৈচিত্র দেখা যাবে আর এভাবেই সাজানো হয়েছে বর্ণিল এই মহামঞ্চ। পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি চরিত্র মঞ্চের নির্দিষ্ট করে দেওয়া স্থান থেকে সংলাপ আওড়ে চলেছে। প্রকৃতি অনুসারে মঞ্চের একটি চরিত...

ভালোবাসতাম বলে কোনো শব্দ পৃথিবীতে নেই !

ছবি
তোমরা আমার কাছে প্রচুর ভালোবাসা পাবে,  মুক্ত আকাশের মতো বিশালতা ...  কিন্তু তার জন্য আছে ছোট্ট এক‌টি শর্ত।  ঘৃণা করতে পারবো না,  যতই আঘাত আসুক তোমাদের থেকে।  যাদেরকে ভালোবাসা হয় তাদেরকে ঘৃণা করতে নেই,  ঘৃণা করা যায় না! ভালোবাসতাম বলে কোনো শব্দ পৃথিবীতে নেই 

এবারের শীত এবং একটি লাল টিপের গল্প

ছবি
মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। গত দুই ঘন্টা ধরে একটানা ... ক্ষিলখেত থেকে উবারে চেপে গাবতলী এসে নেমেছি আধা ঘন্টারও আগে। বৃষ্টি সবসময়ই খুব টানে আমাকে আর তার চূড়ান্ত প্রতিফলন ঘটে যখন ইচ্ছেমতো ভিজতে পারি। কিন্তু আজ বড্ড আফসোস হচ্ছে! পূর্বাশা কাউন্টারের সামনে থেকে হাটা শুরু করলাম, উদ্দেশ্য ধোয়া ওঠা এক কাপ চা । এই বৃষ্টিটা হচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা, আর আজকের বৃষ্টি আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে অনেক দূরের একটি শহরে। আমার শহর ঝিনাইদহে... ধোয়া ওঠা চায়ের কাপ আর সিগারেট নিয়ে কাউন্টারের সামনে এসে দাড়ালাম, বাস ছাড়বে আরো ১৫ মিনিট পর। ঝিনাইদহে শীত মানে কামেনী ফুলের সুবাস! আমাদের পারিবারিক গোরস্থানের প্রাচীন কামেনী গাছটি আমাকে ডাকছে। যখন আমি খুব ছোট তখন দাদা আমাকে তার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়, তারপর থেকেই আমাদের প্রেম। দাদা আজ ১৪ বছর সেই কামেনী গাছের নিচে গভীর নিদ্রায় শুয়ে আছে। টানটা বোধহয় সেইজন্যই একটু বেশী। আমার শহরে শীতের নানা রকমের সংজ্ঞা আছে , সেখানে শীত মানে সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরের শিউলি আর জবা ফুলের ঘ্রাণ। মিরু কাকার ডাক শুনে ভাবনার ভেতর থেকে বের হলাম। মিরু কাকা হচ্ছে পূর্বাশা পরিবহনের ড্রাইভার এবং আমার...

ডিসেম্বরের রাতগুলো !

ডিসেম্বরের রাতগুলো খুব ভয়ংকর হয়!  আমাকে ক্লান্ত করে দেয় প্রতিটা রাত ..  বইয়ের পাতা আর নীল ধোয়া আমাকে আচ্ছন্ন করে তোলে । কলমের গতিপথ বদলে যায়  আর সাথে বেজে চলে শিশিরের ডাক,  বড্ড নিঝুম নিশ্চুপ!