ভাষার নামে একটি দেশ ও জাতির নাম "বাঙ্গালী"
মানুষ সামাজিক জীব। একে অপরের কাছে তার ভাবনা-চিন্তা, সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা ইত্যাদি অনুভূতি প্রকাশ করে ভাষার মাধ্যমে। এ ভাষার মাধ্যমে মানুষে মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। বাঙ্গালীর মুখের ভাষা বা মাতৃভাষা "বাংলা"। বাংলা, বাঙ্গালী এবং বাংলাদেশ এর সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের দূরত্ব দিন দিন কোথায় চলে যাচ্ছে এটা নিয়ে কেউ একটি বারের জন্য হলেও কি ভেবে দেখেছেন? দেখুন, ফার্সির আগে আমাদেরকে সংস্কৃতি শিখতে হয়েছে তারপর শিখেছি ইংরেজি। পাকিস্তান আমলে উর্দু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। আমরা বললাম চলবেনা "বাংলা চাই"। সেই দাবি নিয়ে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হলো কিন্তু বাংলা কোথায়? বাংলা চলছে? না আজ বাংলা চলছে না। কিন্তু আমরা বাঙ্গালীরা কি জানি কোথা এবং কেমন করে পেয়েছি এই মাতৃভাষা বাংলাকে? এজন্যই মাতৃভাষা সম্পর্কে কিছু বলার আগে আজ "বাংলা", "বাঙ্গালী" এবং "বাংলাদেশ" কে নিয়ে কিছু কথা বলা একান্তই প্রয়োজন হয়ে উঠেছে।৫২'এর ভাষা আন্দোলন বা ৭১'এর মহান মুক্তিযুদ্ধের পর আমরা বাঙ্গালী হয়েছি তা কিন্তু নয়। আমাদের বাঙ্গালী হয়ে ওঠার পেছনে আছে হাজার বছরের ইতিহাস। আদিতে বঙ্গ বলে কোনো ঐক্যবদ্ধ জনপদ ছিল না। বঙ্গ যেমন ছিল তেমনি ছিল রাঢ়, গৌড়, বরেন্দ্র, ও সমতট। ঐতিহাসিক আবুল ফজল বলেছেন "বঙ্গের সাথে আল যোগ করে তবেই বাঙ্গাল হয়েছে " । আনুমানিক ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকে বাংলা ভাষার উৎপত্তি ধরা হলে, হাজার বছর ধরে ব্যবহারের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষা আধুনিক রূপ বা বর্তমান রুপ লাভ করেছে । নেগ্রিটো, অস্ট্রিক, এবং দ্রাবিড়দের হাতেই প্রাচীন বাংলার সভ্যতা ও সংস্কৃতির বুনিয়াদি গড়ে উঠেছিল। এ অঞ্চলের আদিবাসীরা তখন টোটেম গোত্রে বিভক্ত ছিল। ঋকবেদে তাদের কথা বলা হয়েছে, সেই হাজার বছর পূর্বের ইতিহাস থেকে প্রমাণিত হয় বাঙ্গালীর পূর্ব প্রজন্ম ছিল বীরের জাতি এবং সমাজ সংস্কৃতির অধিকারীও। প্রাচীন ল্যাটিন ভাষার ইতিহাস গ্রন্থে বাঙ্গালীর বীরত্বের কথা লেখা রয়েছে।
বাংলা ভাষা একদিনে জন্ম নেয়নি। ১৯০৭ সালে মহামহোপাধ্যায় হরিপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় বৌদ্ধ ধর্মের ইতিবৃত্ত সন্ধানে তৃতীয়বার নেপালে গমন করেন এবং নেপালের রাজকীয় গ্রন্থাগারে সন্ধান পান কয়েকটি প্রাচীন পুঁথির। একটির নাম "চর্যাচর্যবিনিশ্চয়" । পরবর্তী সময়ে অনেক তর্ক বিতর্ক, গবেষণা ও অনুসন্ধান এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় যে, এই পুঁথিই বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের আদি নিদর্শন, এর নামকরণ করা হয় "চর্যাপদ "। এরপর ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে বসন্তরঞ্জন রায় বাঁকুড়া জেলার বন বিষ্ণুপুরের কাকিল্যা গ্রামের অধিবাসী শ্রীযুক্ত দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এর নিকট থেকে একখানি পুঁথি আবিষ্কার করেন এবং সাত বছর পর ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে নিজের সম্পাদনায় প্রকাশ করেন। এর নামকরণ করেন "শ্রীকৃষ্ণকীর্তন" কেননা প্রথম দুখানি এবং শেষের অত্যন্ত একখানা পাতা পাওয়া যাইনি বলে প্রকৃত নাম জানা সম্ভব হয়নি। প্রাচীন এই পুঁথি দুটি থেকেই মূলত বোঝা যায় বাংলা ভাষার উৎপত্তি এবং বিকাশ সম্পর্কিত অনেক মূল্যবান তথ্য। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ইন্দো-ইউরোপীয় মূল ভাষার কালকে খ্রীস্টের জন্মের ৫০০০ বছর পূর্বের বলে মনে করেন এবং এর বিবর্তনের স্তর বিন্যাস করে বাংলা ভাষার উদ্ভব ও বিকাশ কাল নির্ণয় করেছিলেন। সেটিকেই আমরা সঠিক বলে মনে করি।
০১. প্রাচীন যুগ - ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দ।
০২. মধ্যযুগ - ১২০১ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ ।
০৩. আধুনিক যুগ - ১৮০১ খ্রিস্টাব্দ থেকে বর্তমান।
০২. মধ্যযুগ - ১২০১ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ ।
০৩. আধুনিক যুগ - ১৮০১ খ্রিস্টাব্দ থেকে বর্তমান।
গৌড়ীও কালে সুলতানি শাসনামলে বড়ু চন্ডীদাস "কৃষ্ণলীলা" (আধুনিক নাম শ্রীকৃষ্ণকীর্তন) বিষয়ে পুস্তক রচনা করেছেন। তার সময়কালে শাহ মুহম্মদ সগীর "ইউসুফ জুলেখা " কাব্য রচনা করেছেন। বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলমান কবি হিসেবে তিনি গৌড়ের সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের রাজত্বকালে (১৩৯৩-১৪০৯ খ্রীঃ) ইউসুফ জুলেখা কাব্য রচনা করে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছেন। পবিত্র আল কুরআন ও বাইবেলে বর্ণিত কাহিনী অবলম্বনে রচিত ইরানের মহাকবি ফেরদৌসী এবং সুফি জামীর মূল কাহিনী অবলম্বনে শাহ মুহম্মদ সগীর এই কাব্য রচনা করেন। সুপ্রাচীন কৃত্তিবাস ওঝা জনপ্রিয় সংস্কৃতি মহাকাব্য "রামায়ণ " এর বাংলা অনুবাদ করেন এই সময়ে। রামচন্দ্রের কাহিনী এক হাজার বছর খ্রীঃ পূর্বাব্দ থেকে ভারতবর্ষে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল বলে মনে করা হয়। বাল্মীকি মুনি খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে মতান্তরে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে "রামায়ণ " রচনা করেন। যশোরাজ খান বাংলা ও মৈথিলি ভাষার মিশ্রণে গঠিত "ব্রজবুলিতে" সর্বোত্তম পদ রচনা করেন এই সময়ে। কানা হরিদত্ত বিপ্রদাস পিপিলাই এবং বিজয় গুপ্ত প্রমুখ সর্পের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মনসার মহাত্ব সূচক পালা রচনা করেন। এই দেবীর আরেক নাম পদ্মাবতী যে কারণে "মনসামঙ্গল" কাব্য কোথাও কোথাও "পদ্মাপুরাণ " হিসেবে অভিহিত। বাংলা ভাষায় "মহাভারত " কাব্য সংক্ষিপ্ত অনুবাদ এই সময়েই হয় এবং তা মুসলিম শাসক গৌড়েশ্বর সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের সেনাপতি লস্কর পরাগল খানের উৎসাহে কবীন্দ্র পরমেশ্বর রচনা করেন।মধ্যযুগের সূচনালগ্নে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ স্থাপিত হলে ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে বাংলা বিভাগ খোলা হয়। এতে অধ্যক্ষ হিসেবে আসেন শ্রীরামপুর মিশনের পাদ্রী এবং বাইবেলের বাংলা অনুবাদ উইলিয়াম কেরি। সেখানে বাংলা গদ্য কলেজের পাঠোপযোগী গ্রন্থ রচনায় আত্মনিয়োগ করেন রামরাম বসু, গোলোকনাথ শর্মা, মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার প্রমুখ। এদের হাতে বাংলা ভাষা নতুন রূপ পেতে থাকে। তারপর বাংলা ভাষা ও সাহিত্য এবং বাঙ্গালী হিন্দু সমাজের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত রাজা রামমোহন রায় এবং ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। বাংলা সাহিত্য ধীরে ধীরে সম্প্রসারিত হতে লাগলো। প্র-আধুনিকতার ছোঁয়া পাবার পর এলেন কালীপ্রসন্ন সিংহ, প্যারীচাঁদ মিত্র, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মীর মশাররফ হোসেন, মোজাম্মেল হক, মোহাম্মদ নজিবর রহমান, বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ গদ্যশিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অপরাজেয় কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম প্রমুখ শক্তিশালী মনীষী লেখিকগণ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং প্রমথ চৌধুরীর যৌথ প্রচেষ্টায় কথ্য ভাষারীতি বা চলিত ভাষা যে ভাষায় আমরা কথা বলি ও লিখি তার সাহিত্য উপযুক্ত মর্যাদা লাভ করে এবং জনপ্রিয়তা অর্জন করে। মূলত প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত সাময়িক পত্রিকা "সবুজপত্র " প্রকাশের পর থেকে তারই ঐকান্তিক আগ্রহে রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর কথ্য ভাষারীতিতে নিয়মিত লেখালেখি করেন। "ঘরে বাইরে " উপন্যাস রচিত হওয়ার পর ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করে। তারপর থেকে চলিত গদ্যরীতি বহমান ... আজ আমরা যে রীতিতে কথা বলছি ও লিখছি তা কিন্তু একদিনে আমাদের কাছে আসেনি!! রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর এ সময়ে বাংলা ভাষা এবং সাহিত্য সমৃদ্ধিতে মনোনিবেশ করেন। তাকে এমনিতেই "বিশ্ব কবি " বলা হয় না!
ডক্টর জনসন সাড়ে আট বছর সময় নিয়ে ইংরেজি ভাষায় অভিধান সংকলন করেছিলেন। তিনি সেই অভিধানের ভূমিকায় বলেছিলেন, "আমি দেখলাম আমাদের ভাষায় শব্দের শৃঙ্খলা নেই, শক্তি আছে নিয়ম নেই, যেদিকে তাকাই চোখে পড়ে অস্পষ্টতা, যা পরিষ্কার করা প্রয়োজন। বিভ্রান্তি যা অপেক্ষা করছে নিয়ন্ত্রণের "। আমরা বাঙ্গালীরাতো পশ্চিম থেকে ডক্টর জনসনের গুনটা নিতে পারিনি! পশ্চিমের বিচ্ছিন্নতা বোধ, দায়িত্ব জ্ঞানহীনতা, উত্তেজনা প্রিয়তা, যৌনতা, অশ্লীলতা ইত্যাদি দোষ গুলো আমাদের সংস্কৃতিতে আনতে পারলাম, চর্চা করলাম এবং করছি কিন্তু ঠিকই!! তাদের গুনগুলোর কোনো খোজ কি কখনো করেছি?কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বাঙ্গালী উপাচার্য গুরুদাস বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন, "দেশীয় ভাষাসমূহকে সমৃদ্ধ করতে হবে " তিনি আরো বলেছিলেন," নিজের ভাষার মাধ্যমে জনগণের কাছে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার আবশ্যক " । যেটা আমরা চীন, জাপান, মালাইশিয়া, আমেরিকা প্রভৃতি প্রভাবশালী দেশগুলিতে দেখিতে পাই। ১৯০৭ সালে সমাবর্তন ভাষণে আশুতোষ মুখোপাধ্যায় গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছিলেন, " নিজেদেরকে বিজাতীয় করে তুলোনা " এবং তিনি নিজে নিরন্তন চেষ্টা করতেন দেশীয় ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশ, দেশীয় মেধার অনুশীলন যথাসম্ভব অর্জন করতে।আমার সোনার বাংলা!! ৪৭'এ এসে পানি ও জল, আব্বা ও বাবার জের ধরে বিভক্ত হয়ে হয়ে পশ্চিমবঙ্গ চলে গেল ভারতের সাথে। যে ধর্মের ভিত্তিতে ভারতবর্ষ থেকে সৃষ্টি হয়েছিল পৃথক রাষ্ট্র "পাকিস্তান" তা ধর্মের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে টিকে থাকতে পারেনি! ভাষার আঘাতে বিভক্ত হয়ে গেছে!! ৫২'তে ছিনিয়ে আনা "বাংলা " আমাদেরকে ৭১'এর প্রেরণা যুগিয়েছিল। বাঙ্গালী গর্জে উঠেছিল। চারদিক কেঁপে উঠেছিল সেদিন "জয় বাংলা " স্লোগানে। ভাষা তেমন ক্ষমতা রাখে। ভাষার মধ্যেও ইতিহাস থাকে, থাকে ঐতিহ্য। তার চাঞ্চল্য রক্তের ভিতরে প্রবহমান, সে আঘাত করে যখন সুযোগ পাই। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখি আমরা, ভাষা ধর্মকেও ছাড়িয়ে যায়!! "লোকে ধর্মান্তরিত হলেও ভাষান্তরিত হয় না "। বাংলা একটি ভাষার নাম, ভাষা থেকে জন্ম নেয়া একটি দেশের নাম। একটি জাতীর নাম "বাঙ্গালী "!! বাঙ্গালী জাতি বীরের জাতী। দেশ এবং মাতৃভাষার জন্য "বাঙ্গালী" জাতি অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছে।
আজ আধুনিক বাঙ্গালী ভাষাকে কোথায় নিয়ে গেছে! আধুনিকতা মানে এমন নয় যে নিজের সত্ত্বাকে বিসর্জন দিয়ে নিজের ভাষাকে বিসর্জন দিয়ে এমন বিশেষ কিছু অর্জন করা। আমি কোনো ভাষাকে ছোট করতে চাচ্ছি না দৃষ্টান্ত দিতে যাচ্ছি মাত্র। থাইল্যান্ডে একসময় বিজ্ঞাপনে ইংরেজি ব্যবহারের জন্য কর দিতে হতো! আর আমরা বাঙ্গালী যারা ভাষার জন্য রক্ত দিয়ে পৃথিবীর বুকে ইতিহাস সৃষ্টি করলাম তারাই কি না আজ হিন্দির আগ্রাসনে বড়ই বিপন্ন হয়ে উঠেছি!! হিন্দি বাইরে নেই, ঘরের ভেতরে ঢুকে পরেছে টেলিভিশনের মধ্যে দিয়ে। বাংলা চলচ্চিত্র আজ বিপন্ন হিন্দি এবং ইংরেজি ছবির উৎপাতে। এত বেশি ইংরেজি শব্দ, বাক্যাংশ, এমন কি আস্ত আস্ত বাক্য প্রবেশ করছে আমাদের মুখের ভাষায় যে কখনো কখনো মনে হয়, "বাংলার সঙ্গে ইংরেজি মেশেনি, ইংরেজির সঙ্গেই বাংলা মেশানো হচ্ছে "। দুধে পানি নয়, পানিতে দুধ।বাঙ্গালীর পক্ষে অন্য ভাষা জানতে কোনো নিষেধ নেই। ভিন্ন দেশে থাকলে যে সে অবাঙ্গালী হয়ে যাবে তাও নয়। যতই জানুক যেখানেই থাকুক সেই যথার্থ বাঙ্গালী, যে বাংলা বাংলা জানে, বলে ও লেখে এবং সেই সঙ্গে একই সঙ্গে বাঙ্গালীকে ভালবাসে। আর তাহলেই সে বাঙ্গালী, না হলে না!! আমি স্বপ্ন দেখি, একদিন আমরা "বাঙ্গালী " বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করব। ভালবাসবো বাংলাকে। একদিন সর্বত্র বাংলা চলবে, বাঙ্গালী তো অবশ্যই বিদেশীরাও বাংলা শিখবে সোৎসাহে। অনুবাদের কোনো অবধি থাকবে না। বাংলা অবনুবাদ তো বটেই বাংলারও অনুবাদ হবে। বাংলাদেশের বাঙ্গালী খাঁটি বাঙ্গালী হবে। মাতৃভাষা ছাড়া যে প্রকৃত শিক্ষা কিছুতেই সম্ভব নয়। আমাদের একজন আধ্যাত্মিক লালন খুবই দরকার, দরকার একজন ধর্মপ্রাণ নজরুলের। বর্তমান যুবসমাজকে ধ্বংসের মুখ থেকে ফিরিয়ে আনবার জন্য একজন রোমান্টিক রবীন্দ্রনাথের প্রয়োজন। একজন বঙ্কিমচন্দ্রের কপালকুণ্ডলাকে ফিরিয়ে আনতে হবে যে পথ হারানো পথিক কে মনে করিয়ে দেবে "পথিক তুমি পথ হারাইয়াছ " । বাংলা ভাষার সাথে মিশে আছে আমাদের হাজার বছরের পরিচয়, শেকড়ের ইতিহাস।
এত কিছু বলার পরেও, এতটা অনুভব করার পরেও, ধৈর্যের সাথে শোনার পরেও যদি বলতে ইচ্ছে করে "Plz am not understand, আরেকবার বলবেন? " তাহলে আমি আপনাকে বলতে চাই, " ঘুমিয়ে পড়ুন আপনাকে আর কোনোদিন জাগতে হবে না "!!!
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন